উনিশ বছর পরে

স্মৃতিচারণ করতে করতে আপন মনে 

রেলগাড়ি থেকে নেমে মেঠো পথ ধরে 

ফিরে আসছি দেশে, উনিশ বছর পরে। 

শীর্ণ দেহ ঝাউ বনের সবুজে

কে যেন দিয়েছে হলুদ হাতের ছোপ 

পোড়া জমিতে বর্ষা যদিও নেমেছিল 

তবুও কাকের হবিস্যি করার দাগ 

এখনও প্রকট হয়ে আছে, উনিশ বছর পরেও।

 

বৃদ্ধ বট দাঁড়াতো মাথা তুলে 

এখন পড়েছে সামনের দিকে নুয়ে 

যদিও তার ছায়াটা হয়েছে বড় 

শিকড় গেড়েছে মাটির আরও গভীরে 

পত্রগুলো শক্ত করেছে মুঠী, উনিশ বছর ধরে।

 

জরাজীর্ণ পুকুরটার সাথে 

বক আর মাছরাঙা দেখি খেলা করে 

মাথার ওপরে শঙ্খচিল ওড়ে 

আর শোনা যায় লক্ষ্মী পেঁচার ডাক 

জোৎস্না হয়েছে ভীরু সাদা পায়রা 

উনিশ বছর পরে।

 

এখনও শোনা যাচ্ছে ঝিঁঝির ডাক 

ধূর্ত শেয়াল জানলায় মারে উঁকি 

ভোঁ ভোঁ শব্দে উড়ছে যে কাঁচপোকা 

মক্ষিকার গুঞ্জন মধুবনে 

আর জঞ্জালের গাদায় মুখ গুঁজে বুনো শুয়োর 

উনিশ বছর পরেও।

 

দেখতে দেখতে দীর্ঘ উনিশটা বছর কেটে গেছে। 

সেদিনকার সদ্যজাত শিশু 

আর এক বছর পরেই 

এক কুড়ি পূর্ণ করবে 

সেও এই মাটির বুকে বেড়ে উঠেছে আমার মতোই 

উনিশ বছর ধরে।

 

উনিশ বছর কাটিয়ে চলে গিয়েছিলাম 

ফিরে এলাম উনিশ বছর পরে 

আর দু'বছর পরে আমার বয়স দু-কুড়ি পূর্ণ হবে

এখন আমি চলে যাব উনিশ বছরের ঐ যুবকের সঙ্গে 

ফিরে আসব আবার উনিশ বছর পরে।।