জ্যোৎস্না

সংহত স্বর্ণালী সন্ধ্যায় 

জড় করা দুহাতের ওপর চিবুক রেখে, 

একা বসে জানালায় 

খুঁজেছি তোমায় 

ট্রাম লাইনের ধারে ম্লান সন্ধ্যালোকে, 

জানতে পারিনি কখন সমুদ্রের ঢেউ এসে 

তুলে নিয়ে গিয়েছে তোমাকে, 

তটের মুক্তো মনে করে। 

সারা সন্ধ্যা ক্লান্ত শরীরে

 বসে আছি চুপ করে 

বর্ষার ভিজে কাকের মতন কখনও সখনও মাথা ঝেড়ে। 

হঠাৎ হ্যালোজেনের তীব্র আলো 

আমাকে সচকিত করে জ্বলে ওঠে, 

পাশের পাড়ার দূর মাঠে 

দেখি এক পরছায়া কালো, 

শীর্ণ বট ডালপালা মেলে 

দাঁড়িয়ে মাঠের একধারে, 

জরাজীর্ণ পত্রগুলি গিয়াছে তার ঝরে 

ভূতের মতন লম্বা দশহাত বার করে 

শান্তি তার বোধ করি আমাকেই গিলে খেতে পেলে।

আবছা আলোতে দেখি উড়ে যায় দু-চারিটা বাদুঢ় শাবক

বটের ঝুরি ধরে নেমে আসে মানুষের ঢল

দূরমহাশূন্য থেকে ভেসে আসে লক্ষী প্যাঁচার ডাক,

আর হলুদ বটপাতার ফাঁকে ফাঁকে ইতস্ততঃ ছড়িয়ে লাল বটফল।