বর্ষা

সূর্যের পথ করিয়াছে রোধ কালো মেঘের সারি 

সমুদ্র ঢেউ উঠিছে ফাঁপিয়া ভেদিয়া পাতালপুরী 

বুকের ওপরে দাঁড়ায়ে পামর 

চলিছে প্রাণের চাপান-উতোর 

অগ্নিবীণার সুর-ঝঙ্কারে দামামা বাজিল উঠি 

সূর্য তাহার মুঠিতে ধরিছে সাদা ফেনার ঝুঁটি।

 

শ্রাবণের ভরা বাদরে আজিকে মেঘেরা ক্লান্তিহীন 

সূর্যের পরে যুদ্ধ ঘোষণা করিয়াছে কয়দিন 

আকাশেতে দেখা যায় না কো তারা 

সাদা পক্ষীরাজের ঘোড়া 

পিঠে নিয়ে তার সোনালী সওয়ার লাল সমুদ্দুরের 

গমনপথ অবরুদ্ধ করেছে রোদ্দুরের।

 

আলোকছটার রক্তিম আভায় ভরে আছে অমা-নিশি 

লুকোচুরি খেলে কালপুরুষ আর সপ্ত-ঋষি 

শূন্যপারে জলদডঙ্কা, বজ্রনিনাদে ঘুচায়ে শঙ্কা 

সূর্যেরে ঘেরি বন্দী করিল দূরাকাশে বীরভরে 

লুকায়ে রাখিল আকাশ-হতে-আরও দূরে-মহাকাশ পারে।

 

ক্ষণকালের রাজত্ব তার রহিবে না বেশিদিন 

দিনকতকের 'রাজা-সাজা' খেলা-শুধু এই কয়দিন 

কাশ, শিউলিতে শরতের বন, ভরে যাবে এই পুরিলে শ্রাবণ 

উদ্ধত কালো মেঘমালারাশি হবে সাদা পেঁজা তুলো 

সূর্যের সাদা চাবুকে ও-মেঘ করেছে যে পিঠ কুলো।।