জন্মসূত্রে আমেরিকান, সিলভিয়া প্ল্যাথ (১৯৩২-১৯৬৩) কবিতা, উপন্যাস এবং ছোট গল্পের লেখক হিসেবে সুপরিচিত যদিও কবি হিসেবেই তাঁর খ্যাতি সবচেয়ে বেশি। ওনার বেশিরভাগ লেখাই স্বীকারোক্তিমূলক। প্রথম কবিতা সংকলন প্রকাশিত হয় ১৯৬০ সালে। সারা জীবনই উনি ‘ক্লিনিকাল ডিপ্রেশনে’ কষ্ট পেয়েছেন এবং ১৯৬৩ সালে সুইসাইডে প্রাণত্যাগ করেন। ওনার বাকি সব কটি বইই ওনার মৃত্যুর পরে প্রকাশিত হয়।
এ আলো কল্পনার - ঠাণ্ডা, অলৌকিক
এখানে গাছ কালো আর আলো নীল।
ঘাসেরা আমার পায়ে দুঃখ নিবেদন করে, যেন আমি ভগবান
আমার গোড়ালিতে সুড়সুড়ি দেয় তাদের অমায়িক ফিসফিসানি।
ধোঁয়াটে, রহস্যময় কুয়াশায় ভরা পরিবেশ
আমার বাড়ির থেকে একসারি সমাধিশিলার দূরত্বে।
কে জানে, তার অপর প্রান্তটা কেমন।
চাঁদ তো কোন প্রবেশপথ নয়। ওতো নিজেই একটা মুখ।
আঙ্গুলের গাঁটের মত ফ্যাকাসে আর খুবই বিপর্যস্ত
সমুদ্রকে টেনে আনে গুরুতর অপরাধের মত
নিশ্চুপ, হতাশায় হাঁ। এইখানে আমার বাসস্থান।
রবিবার দুবার করে ঘণ্টা বাজে আকাশ কাঁপিয়ে -
আটটা বিরাট জিভ পুনরূত্থানের বার্তা পাঠায়
আর সবশেষে, গম্ভীরসুরে তাদের নাম ঘোষণা করে।
ইউ আকাশের দিকে তাকায়, গড়নে সে গথিক।
চোখ আরও উঁচুতে, চাঁদে পৌঁছে যায়।
চাঁদ আমার মা। তবে মেরীর মত মায়াবী নয়।
তার নীল কাপড় থেকে ছোট ছোট বাদুড় আর প্যাঁচা বেরোয়।
আমার সাধ হয় কোমলতায় বিশ্বাস করতে -
বিশ্বাস করতে যে প্রতিমার মুখ, মোমবাতির আলোয় নরম,
মায়াময় চোখ নামিয়ে কেবল আমার দিকেই তাকিয়ে আছে।
আমি অনেক ওপর থেকে পড়েছি। মেঘেরা, নীল আর মোহময়,
ফুলের মত ফুটে আছে তারাদের মুখের সামনে
গির্জার ভেতরে দেবদূতেরাও নিশ্চয়ই নীল
হাল্কা পায়ে ভেসে আছে ঠাণ্ডা বেঞ্চের ওপরে
তাদের হাতে, মুখে, ঐশ্বরিকতার গাম্ভীর্য
চাঁদ এসবের কিছুই দেখতে পায়না, সে নগ্ন আর উদ্দাম।
আর ইউ গাছের প্রতিচ্ছায়া - অন্ধকার, মৌন অন্ধকার।